আজ ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গ্রুপিং কোন্দলে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সদরঘাটে, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ছাত্রলীগ নেতা শিহাব।

চট্টগ্রাম রিপোর্টার : হুমায়ুন কবির হিরু

চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট ইসলামিয়া কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষার ফরম পূরণকে কেন্দ্র করে এবং কলেজের আধিপত্য বিস্তারে তিন দিনের টানা সংঘাত ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার বলি হলো ছাত্রলীগ নেতা শিহাব উদ্দিন রিজভী।

আহত সেই ছাত্রলীগ নেতা শিহাব উদ্দিন রিজভী এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইডিইউতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

গত ২৬ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) রাত ৮ টায় উত্তর নালাপাড়া এলাকায় রিজভীকে একা পেয়ে কুপিয়ে জখম করেছে সন্ত্রাসীরা। এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা আহত রিজভীকে চমেক হাসপাতাল ভর্তি করে। ভর্তির পর থেকে মধ্যরাতে এ পর্যন্ত আহত ছাত্রলীগ নেতার শরীরে ৭ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে বলে চমেকের একটি সূত্রে জানিয়েছে।

আহত শিহাব উদ্দিন রিজভী চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আবু তালেব রনির অনুসারী বলে জানা যায়। আর আবু তারেক রনি হচ্ছেন ইসলামিয়া কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি খলিলুর রহমান নাহিদের অনুসারী।

স্থানীয়রা সূত্রে জানা গেছে, ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র লীগের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত তিনদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি খলিলুর রহমান নাহিদ গ্রুপ এবং আবু কায়সার গ্রুপের অনুসারীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।

এসব গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছে খলিলুর রহমান নাহিদের অনুসারী চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আবু তারেক রনি, চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের গণ যোগাযোগ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক শাহরিয়ার হাসান,ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিবুল হাসান রাকিব, সহ-সভাপতি সাইদুল ইসলাম পারেল এবং কলেজের এজিএস নোমান সাঈদ।

ঘটনার বিবরণে জানা যায় শিহাব উদ্দিন রিজভীকে একা পেয়ে কলেজ ছাত্রলীগের দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন তাকে কুপিয়ে আহত করে, সময় তাঁর ব্যবহার মোটরসাইকেলও ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিবুল হাসান রাকিব, সহসভাপতি সাইদুল ইসলাম পারেল এবং কলেজের এজিএস নোমান সাঈদ ভিপি খলিলুর রহমান নাহিদ গ্রুপের অনুসারী হলেও এই তিন গ্রুপ মূলত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও ইসলামিয়া কলেজের সাবেক এজিএস আশেকুন্নবী চৌধুরীর নিয়ন্ত্রণে চলে। আবার আশেকুন্নবী চৌধুরীও ভিপি খলিলুর রহমান নাহিদ গ্রুপের অনুসারী বলে জানা গেছে।

এদিকে এজিএস নোমান সাঈদকে সদরঘাট থানার ইসলামিয়া কলেজের সামনে থেকে ধাওয়া করে দারোগাহাট রোডের মালুম মসজিদে এলাকায় নিয়ে যায় সদরঘাট ইউনিট আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু কায়সার গ্রুপ। এনিয়ে খলিলুর রহমান নাহিদ গ্রুপ ও আবু কায়সার গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান নেই, এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদ কার্যালয়ে মহানগর ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আবু তারেক রনি ও মহানগর ছাত্রলীগের গণসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক শাহরিয়ার হাসান সহ অন্যান্যরা বলেন কলেজ ক্যাম্পাসে কোন বহিরাগত প্রবেশ এবং কলেজের শৃংখলার বিনষ্ট করতে পারবে না,তাই থমথমে পরিস্থিতি মোকাবেলায় কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়ন করা হয়,কিন্তু ২৬ আগস্ট সকাল থেকে এই দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলতে থাকে আর রাতে ঘটে ছাত্রলীগ নেতা শিহাব উদ্দিন রিজভীকে কোপানোর ঘটনা।

এ বিষয়ে সদরঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন জানান, ইসলামিয়া কলেজের সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয়নি। তবে হামলাকারীদের আটকের জন্য অভিযান চলছে।

জানা গেছে, কলেজে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিবাদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে বিভাগ চলছিল দীর্ঘদিন ধরে, সেটার রেশ ধরে দুই দিন আগে নিউমার্কেট এলাকায় দুই গ্রুপের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। তার কারনে বৃহস্পতিবার সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে ফের ঝামেলা শুরু হয় খলিলুর রহমান নাহিদ ও আবু কায়সার গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.

     এই বিভাগের আরও খবর